আজ আমার সাংবাদিকতা জীবনের তিন বছর পূর্ণ হলো। শখের বশে পত্রিকায় একটা ফিচার লিখে সাংবাদিকতায় প্রবেশ করেছিলাম। আমার লেখাটি দু কলামে পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে ছাপানো হয়েছিলো। বার্তা সম্পাদক আমার লেখার একটি লাইনও কাটেন নি। বন্ধুবান্ধবসহ প্রিয় জনের অসংখ্য অভিনন্দন পেয়েছিলাম। তাদের ভালবাসাকে পুঁজি করে সেই ২০১৩ সালের ৪ই মে থেকে পথচলা। তারপর আর পিছনে থাকাতে হয় নি। সুযোগে সুযোগে প্রথিতযশা সাংবাদিকদের স্বান্নিধ্যে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছি এবং প্রতিনিয়ত শিখছি ; দৈনিক ভোরের কাগজের সাংবাদিক আব্দুল হক মামুন ভাই'র কাছ থেকে কিভাবে ক্যামেরা ধরতে হয় তা পর্যন্ত শিখেছি। কখনো লজ্জা পাইনি, কিছু না বুঝলে সিনিয়দের কাছ থেকে বুঝে নিই। আমি সাধারণত ফিচার লিখি ও মাঝে মাঝে সংবাদ প্রতিবেদন, শিশু ও নারী অধিকার নিয়ে নিবন্ধ লিখি। খুব কম লেখা ই-মেইল করি। লেখার মানের প্রতি জোর দিই, সংখ্যার প্রতি নয়। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার নির্বাচন নিয়ে একটা বিশেষ প্রতিবেদন লিখেছিলাম। সেই প্রতিবেদনটি অনলাইনে শেয়ার হয়েছিল কয়েক হাজারবার। এক শতকের উপর পাঠকদের কাছ থেকে ফোন পেয়েছিলাম। এটাই আমার কাছে শ্রেষ্ঠ অর্জন। তিন বছর ধরে বিভিন্ন পত্রিকা, অনলাইন পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও ছোটকাগজে লিখছি; কিন্তু কারো কাছ থেকে এক টাকা নিইনি এমনকি পত্রিকার অফিস থেকেও না। সাংবাদিকতা জীবনে আমার তিনটি অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি জাতীয় ও স্থানীয়সহ মোট তিনটি নির্বাচনে সাংবাদিক হিসেবে পর্যবেক্ষণ করেছি। এটা আমার সাংবাদিকতা জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। লাগাতর তিনবার পর্যবেক্ষণ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমি আজীবন কৃতজ্ঞ।
যখন লেখালিখি শুরু করি তখন আমার বয়স মাত্র ১৬ বছর। নতুন পরিবেশ, নতুন মানুষ। একদিকে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনার চাপ অন্যদিকে সৃজনশীল লেখার চিন্তা ভাবনা। এভাবে ধীরে পত্রিকার সাথে সখ্যতা বাড়তে থাকে। শুরুতেই নিজের কম্পিউটার, ডিজিটাল ক্যামেরা, প্রিন্টার, স্ক্যানার ও ইন্টারনেট সংযোগ ছিলো বলে কারো কাছে ছুটে যাই নি ফ্রিতে ই-মেইল করার জন্য। এমনকি এখনো না! নিজের টাকা খরচ করে ই-মেইল পাঠাই।
আমাকে সবসময় উত্সাহ দিতেন আমার প্রিয় জসিম স্যার। একমাত্র স্যারই আমার কাজগুলো কে পজিটিভলি ভাবতেন। সিংহভাগ বন্ধুরা হিংসা করত; 'সাংঘাতিক' বলে বিদ্রূপ করত। তাই ঐসব লোকদের সংস্পর্শে যাই না। প্রিয় বন্ধু-শত্রু-ঝগড়াটে(!) দূর্জয় ও প্রিয় বন্ধুবর মুখলিস ভাই সবসময় পাশে থেকে উত্সাহ যোগাতেন। আমার মাথায় নতুন নতুন বিষয়ের ধারণা দেন মুখলিস ভাই।
অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও কলম থামাই নি। যে সংবাদগুলো প্রেস হয় তা ব্লগে নিয়মিত পোস্ট দিই আবার কখনো দিই না। অনেকবার চেয়েছি লেখালিখি ছেড়ে দিবো কিন্তু লেখালিখি ছেড়ে দিতে চাইলেও লেখালিখি আমাকে ছাড়তে চায় না।
আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন টিভি সাংবাদিকতা করা।
কারণ, আমার আত্মবিশ্বাস আমি টিভিতে কাজ করলে কিছু করতে পারব। তাই টেলিভিশন মিডিয়ার সবাইকে ফলো করি; তাদের বাচনভঙ্গি, উচ্চারণ, কথা বলার ধরণ ইত্যাদি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে অনেককেই গুরু মানি। কারণ, তাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ডেই আমি নতুন কিছু খুঁজে পাই। নতুন কিছু শিখতে পারি। আমার গুরুরা হচ্ছেন সিডনি প্রবাসী দৈনিক জনকণ্ঠের সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি প্রিয় ফজলুল বারী ভাইয়া, একুশে টিভির উপস্থাপক প্রিয় অঞ্জন দা, পাকিস্তান প্রবাসী সাংবাদিক প্রিয় মাসকাথ আহসান ভাইয়া, এটিএন নিউজের বার্তা সম্পাদক জনপ্রিয় উপস্থাপক প্রিয় মুন্নী দি, যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি প্রিয় মাহফুজ মিশু ভাইয়া, একাত্তর টিভির সিনিয়র প্রতিবেদক প্রিয় ফারজানা রুপা আপু, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের সিলেট প্রতিনিধি প্রিয় গোলজার ভাইয়া।
উনারা কেউই আমাকে চিনেন না এবং কোনোদিন দেখেন নি। প্রতিটি সময়ই তাদের অনুকরণ (!) ও অনুসরণ করি।
এই মানুষদের আমি এতই ভালবাসি যে তাদেরকে মাঝে মাঝে স্বপ্নেও দেখি।
মুন্নী দিদিকে আমি একদিন স্বপ্নে দেখেছি। তিনি আমার একটা সাক্ষাতকার নিচ্ছেন। আমার গুরুদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত শিখছি টিভির সামনে বসে, সামাজিক যোগাযোগব্যবস্থার মাধ্যমে ও ইনবক্সে নক করে বা ফোন করে।
হে গুরুরা,
আজ আমার সাংবাদিকতার তিন বছর পুর্ণ হলো; কাল থেকে চারে পা দিচ্ছি। আপনাদের সাথে জীবনে একবার হলেও যেন কাজ করতে পারি ও একজন ভালো মানুষ হতে পারি সেই আশীর্বাদ করবেন।
আপনাদের দীর্ঘায়ু কামনা করি।
পুনশ্চঃ আজ আমার সাংবাদিকতার তিন বছর পূর্ণ হলো, গতকাল ছিল আন্তর্জাতিক মুক্ত গণমাধ্যম দিবস এবং এর আগের দিন ছিলো প্রিয় মুন্নী দিদিমণির সাংবাদিকতার পঁচিশ বছর পূর্তি!
উৎসর্গঃ ইমদাদুল হোসেন খান।
সাধারণ সম্পাদক, বানিয়াচং প্রেসক্লাব।
(বিঃদ্রঃ ইমদাদ ভাই'র হাত ধরেই সাংবাদিকতায় আমার প্রবেশ।)
অভ্র আজহার।
০৪/০৫/১৬ইং, বুধবার।
বানিয়াচং,হবিগঞ্জ।
Wednesday, May 4, 2016
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment